B

Friday, April 11, 2025

“বৃষ্টিভেজা চিঠি”

“বৃষ্টিভেজা চিঠি” নিশা আর আরিফ—দুজনেই একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত। নিশা ছিল বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী, আর আরিফ পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে পড়ত। দুই বিভাগের দূরত্ব ছিল অনেক, কিন্তু গ্রন্থাগারে তাদের দেখা প্রায়ই হয়ে যেত। নিশা বই পড়তে ভালোবাসত, আর আরিফ শুধু তাকিয়ে থাকতে ভালোবাসত—নিশার বই পড়ার দিকে, তার চুপ করে বসে থাকার দিকে, তার খেয়ালি চুলের দিকে। একদিন হঠাৎ বিকেলে বৃষ্টি নামল। নিশা ছাতা আনেনি। লাইব্রেরির সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে সে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল, যেন আকাশ তাকে উত্তর দেবে—"এই বৃষ্টি কি আর কমবে না?" আরিফ কাছে এসে বলল,"একসাথে ফিরি? আমার ছাতা আছে, কিন্তু বৃষ্টি দুজনকেই ভিজিয়ে দেবে। সমস্যা হবে না?" নিশা একটু হেসে বলল,“সমস্যা না, যদি তুমি ভেজা চিঠি পড়তে জানো।” আরিফ কিছুই বুঝল না। কিন্তু হেসে ফেলল। তারপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই দেখা হতো তাদের। নিশা আরিফকে কবিতা শোনাত, আর আরিফ তাকে বোঝাত—পৃথিবীর গঠন কেমন, সূর্যের তাপ কত ডিগ্রি, কিংবা সময় কীভাবে কাজ করে। একদিন নিশা আরিফকে একটা চিঠি দিল। সেই চিঠিতে লেখা ছিল: “তুমি পদার্থ বুঝো, আমি অনুভব। তুমি সূত্র জানো, আমি শব্দ খুঁজি। কিন্তু আমাদের মাঝখানে যে 'মোহ' নামের অজানা কিছু আছে—তুমি কি তার ব্যাখ্যা দিতে পারো? আমি পারি না। আমি শুধু অনুভব করতে পারি—তোমার পাশে থাকলে সময় থেমে যায়।” আরিফ কিছু বলেনি। শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখল—আবার বৃষ্টি নামছে। সেদিন থেকে তাদের গল্পটা শুরু। প্রথম চিঠির মতোই—ভিজে, নরম, কিন্তু গভীর।

No comments:

Post a Comment

“শেষটা এমনি”

“শেষ চিঠি” ছোট্ট এক নদী-ঘেরা শহর। নদীর নাম শীতলেশ্বরী। এই শহরে বসবাস করে দুই প্রাণ – আরিজ ও মায়া। তারা ছোটবেলা থেকেই একসাথে বড় হয়েছে, ...