B

Monday, April 14, 2025

শেষ চিঠি

শেষ চিঠি শহরের কোলাহল থেকে দূরে, একটি ছোট্ট গ্রামের মেঠোপথের ধারে ছিল রুদ্রর বাড়ি। আর ওই পথ ধরে প্রতিদিন স্কুলে যেত মেঘলা। ক্লাস টেন থেকেই দুজনের পরিচয়, আর পরিচয়ের কিছুদিন পরেই বন্ধুত্ব, তারপর সেই চিরচেনা গল্প—বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে রূপ নেয় প্রেমে। রুদ্র ছিল গ্রামে থেকেই পড়াশোনা করা এক মেধাবী ছেলে, আর মেঘলার স্বপ্ন ছিল শহরে গিয়ে ডাক্তারি পড়া। রুদ্র চেয়েছিল, মেঘলা তার স্বপ্ন পূরণ করুক, যেভাবেই হোক। সেদিন ছিল শরতের এক বিষণ্ন দুপুর। মেঘলার হাতে শহরের কলেজ থেকে অফার লেটার। ও চলে যাবে চিরদিনের মতো, অন্তত কিছু বছরের জন্য। রুদ্র কিছু বলে না, শুধু এক টুকরো কাগজে লিখে দেয়— "যদি একদিন মনে পড়ে, মেঘে ভেজা এই মেঠোপথটা, জানবে আমি এখানেই আছি, অপেক্ষায়।" মেঘলা চলে যায়। পাঁচ বছর কেটে যায়। শহরের কোলাহলে মেঘলা নতুন জীবন গড়ে, নতুন পরিচিতি, নতুন ব্যস্ততা। রুদ্র? সে অপেক্ষা করে প্রতিদিন মেঠোপথে, এক কাপ চায়ের সাথে, মেঘলার জন্য। শেষমেশ, মেঘলা ফিরে আসে। কিন্তু তার হাতে ছিল না কোনো উপহার, ছিল না কোনো আনন্দ—ছিল শুধুই এক বৃষ্টি ভেজা সকাল, আর হাতে ধরা একটা খবরের কাগজের টুকরো— "স্থানীয় যুবক রুদ্রের আত্মহত্যা, প্রেমিকার ফিরে না আসায় চিঠি রেখে বিদায়" চিঠিটা ছিল ঠিক সেই কাগজের মতো, যে কাগজে রুদ্র লিখেছিল তার শেষ অনুভব। মেঘলা পড়ে: "তোর স্বপ্নের আকাশে আমিও একদিন পাখি হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি মাটির, তুই আকাশের। ভালো থাকিস, মেঘ।"

No comments:

Post a Comment

“শেষটা এমনি”

“শেষ চিঠি” ছোট্ট এক নদী-ঘেরা শহর। নদীর নাম শীতলেশ্বরী। এই শহরে বসবাস করে দুই প্রাণ – আরিজ ও মায়া। তারা ছোটবেলা থেকেই একসাথে বড় হয়েছে, ...