B

Wednesday, April 16, 2025

নীল কুয়াশায় হারিয়ে যাওয়া"

"নীল কুয়াশায় হারিয়ে যাওয়া" চাঁদের আলোয় ভেসে থাকা একটি ছোট গ্রাম—নাম ধুলিখালি। গ্রামের শেষ প্রান্তে বাঁশবনের পাশে এক কাঁচা পথ, যার শেষ মাথায় ছিল এক ছোট টিনের ঘর। সেই ঘরেই থাকত মেঘলা—এক পিতৃহীন কিশোরী, যার চোখে সবসময় স্বপ্নের জোয়ার। আর ঠিক পাশের বাড়িতেই থাকত রায়হান—একজন কবি-মনস্ক যুবক, যার কবিতায় বারবার ফিরে আসত “এক জোড়া বড়ো চোখ”। দুই বাড়ির মাঝে ফাঁকা এক মেঠোপথ, কিন্তু হৃদয়ের দূরত্ব ছিল না বিন্দুমাত্র। মেঘলা প্রতিদিন বিকেলে নদীর ঘাটে যেত জল আনতে, আর রায়হান ছায়ায় দাঁড়িয়ে তাকে দেখত। একদিন সাহস করে বলেই ফেলল— “তোমার চোখ দুটো কবিতা লেখায় বাধা দেয় মেঘলা… একবার হাসো না, দেখি কি হয়!” মেঘলা হেসে উঠেছিল, আর সেই হাসিতে জন্ম নেয় এক অনন্ত প্রেমের গল্প। দিন কাটতে লাগল, ফুল ফুটল, নদীর জলও যেন প্রেমে স্রোত পেল। কিন্তু তাদের ভালোবাসার উপর ছায়া ফেলল সমাজের রীতি আর মেঘলার মামা—যিনি তার একমাত্র অভিভাবক ছিলেন। মেঘলার বিয়ে ঠিক হলো শহরের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। দালালি করে সেই সম্পর্কটা গড়ে তুলেছিল তার মামা, মোটা টাকার লোভে। মেঘলা শেষবার রায়হানকে দেখতে গিয়েছিল। চোখে অশ্রু, হাতে তার লেখা একটি কবিতা— “যদি হারাই আমি, রাখো মনে, এক ফোঁটা কুয়াশা ছিলাম তোমার দৃষ্টি-কোণে…” রায়হান কিছু বলার আগেই মেঘলা দৌড়ে চলে গিয়েছিল। বিয়ের দিন সকালে, খবর এলো—মেঘলা নেই। নদীর ঘাটে তার ওড়না ভেসে ছিল, পাশে পড়ে ছিল সেই কবিতার কাগজ। গ্রামটা স্তব্ধ, নদীটা আজো সেই ওড়না বয়ে নিয়ে চলে... আর রায়হান? সে আজও বাঁশবনের পাশে বসে থাকে প্রতিদিন সন্ধ্যায়, হাতে থাকে একটা নতুন কবিতা— যেখানে নায়িকা আসেনা, শুধু তার ছায়া ফিরে আসে কুয়াশায় ঢাকা সেই নদীর ধারে…

No comments:

Post a Comment

“শেষটা এমনি”

“শেষ চিঠি” ছোট্ট এক নদী-ঘেরা শহর। নদীর নাম শীতলেশ্বরী। এই শহরে বসবাস করে দুই প্রাণ – আরিজ ও মায়া। তারা ছোটবেলা থেকেই একসাথে বড় হয়েছে, ...